জীবনে হাজারটা কষ্ট কিংবা ব্যাথর্তার পরেও দিনশেষে হতাশ হয়ে যেও না!




কিছুদিন আগে একটা পোর্টালে “১৬ টাকা থেকে কোটিপতি” শিরোনামে একজনের জীবনের গল্প পড়েছিলাম। উনি যেই মেসে থাকতেন তার ২০০ টাকা ভাড়া দেবার মতো টাকাও মাসশেষে উনার কাছে অবশিস্ট থাকতোনা। একসময় ভাড়া বাকি পড়তে পড়তে উনাকে মেস থেকেও বের করে দেয়া হয়।

মানুষটা এতটাই হতাশায় ছিলেন যে নিজের ডিগ্রির সার্টিফিকেট টা আগুন পুড়িয়ে শেষে রাস্তার পাশের রাঁধুনির কাজ নিয়েছিলেন । একসময় সেখান থেকে আস্তে আস্তে সেই কাজের পরিধী বাড়াতে থাকেন। সময় গড়িয়ে গড়িয়ে প্রায় বিশ বছর পর সেই লোকটাই ঢাকা শহরের পাঁচটা হোটেলের মালিক…..!!! ভাবা যায়??????

আমরা ভারতের বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমার কে হয়তো অনেকে চিনি। উনার নিজের পড়ালেখার দৌড় কিন্তু নিতান্ত সামান্য, একসময় পেটের দায়ে হোটেলে হোটেলে করাচি হয়ে উনি বাংলাদেশেও কাজ করে গেছেন। অথচ সেই মানুষটাই আজকে খ্যাতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন কোন মামা-চাচার টেলা ছাড়াই শুধুমাএ নিজ পরিশ্রমে। ভাবা যায় উনার হিরো হবার সেই স্ট্রাগল টা কেমন ছিলো????

আমার পরিচিত মেডিকেলের এক বড় ভাই আছেন। উনি উনার ১ম, ২য় এবং ৩য় পেশাগত পরীক্ষায় কোনটাতেই একবারে পাশ করতে পারেন নাই। একদিন আমাকে বলেছিলেন যে সৌরভ মনটা চায় মরে যাই, আমি উনাকে সেদিন সান্তনা দেই নাই। কারন জানি পোড়া কয়লায় পানি ঢাললেও কোনদিন সেটা সাদা পাথর হবেনা। শুধু বলেছিলাম ভাই লেগে থাকেন, হাল ছাড়লেই তো শেষ!!!

মজার কথা হলো সেই ভাই এইবছর বিসিএসে চান্স পেয়ে বর্তমানে সম্মানের সাথে পোস্টিং এ আছেন, মাসশেষে মুঠভরে সরকার আবার টাকাও দেন। অথচ এই মানুষটাই একদিন মরতে চেয়েছিলো, ভাবা যায়?? আমাদের চারপাশে তাকালে তুমি দুই ধরনের মানুষ পাবে। একদল আছে যারা ব্যার্থ হলেও ক্রমাগত চেস্টা করতেই থাকে এবং আরেকদল একবার অসফল হলেই ভাগ্যকে দোষ দিয়ে হাল ছেড়ে দেয়। উপরের আমি যেই মানুষগুলোর নাম নিলাম তারা সবাই প্রথম ক্যাটাগরির। খেয়াল করে দেখো, এদের পিছনে কিন্তু কোন মামা-চাচা কিংবা “লাক” বলে কোন জোর ছিলনা।

ভাগ্য এদের সাথে প্রতিবারই প্রতারনা করেছে কিন্তু এই মানুষগুলো হাল ছাড়েন নি। চিন্তা করে দেখো, যদি ওই ডিগ্রি পাস করা লোকটা আর ৮/১০ জনের মতো পাস করে সাধারন একটা পিয়ন অথবা কেরানির চাকরি শুরু করে দিতো তবে কি তার আজ পাঁচটা হোটেল থাকতো??? যদি ভাগ্য তার সাথে বারবার ব্রিটে নাই করতো তবে হয়তো উনার মাঝে বড় হবার সেই জিদটাই আসতোনা কোনদিন।

আমাদের তাই রক্তে “জিদ” নামের একটা জিনিসের খুব দরকার। আমরা জেনারেশন ক্রাইসিসে আছি। আমাদের ছোটকাল থেকে শিখানো হয় তুমি এটা পারবানা, ওটা পারবানা, ওটা তোমার দ্বারা হবেনা ব্লা ব্লা ব্লা……কিন্তু মনে রাখবা, যে জীবনে কোনদিন ব্যার্থ হয়নাই সে জানেনা সফলতার মানেটা কি।